প্রকাশিত: Sat, Feb 4, 2023 3:34 PM
আপডেট: Tue, Jun 24, 2025 4:14 AM

ভাষা আন্দোলন সৃষ্টি করেছিলো বাঙালির জাতীয় চেতনা

সালেহ্ বিপ্লব: পাকিস্তানের জন্মের মাস সাতেক পরে, ১৯৪৮ সালের মার্চে মোহাম্মদ আলি জিন্নাহ যখন তার জীবনের প্রথম ও শেষবারের মত পূর্ববঙ্গে এসেছিলেন - তিনি হয়তো ভাবেন নি যে সেখানে তার উচ্চারিত কিছু কথা একসময় তারই প্রতিষ্ঠিত নুতন দেশটির ভাঙন ডেকে আনতে ভূমিকা রাখবে। জিন্নাহ তখন পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল, গণপরিষদের সভাপতি এবং মুসলিম লিগেরও সভাপতি। বিবিসি বাংলা

নয় দিনের পূর্ববঙ্গ সফরে জিন্নাহ ঢাকা ও চট্টগ্রামে কয়েকটি সভায় বক্তৃতা দেন। ঢাকায় প্রথম সভাটি অনুষ্ঠিত হয় ১৯৪৮ সালের ২১শে মার্চ, ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে - যা এখন সোহরাওয়ার্দী উদ্যান।

এতে তিনি স্পষ্ট করেই বলেছিলেন, পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় ভাষা হবে উর্দু - অন্য কোন ভাষা নয়। ইংরেজিতে দেয়া সেই বক্তৃতায় তিনি বলেছিলেন, আমি খুব স্পষ্ট করেই আপনাদের বলছি যে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে উর্দু, এবং অন্য কোন ভাষা নয়। কেউ যদি আপনাদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে তাহলে সে আসলে পাকিস্তানের শত্রু।

কয়েকদিন পর জিন্নাহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে ছাত্রদের সামনে আরো একটি ভাষণ দিলেন। সেখানেও একই কথা বললেন তিনি। বললেন, পাকিস্তানের প্রদেশগুলো নিজেদের সরকারি কাজে যে কোন ভাষা ব্যবহার করতে পারে - তবে রাষ্ট্রীয় ভাষা হবে একটিই এবং তা হবে উর্দু। ইতিহাসবিদ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা লিখেছেন, কার্জন হলে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার কথা বলার পর কয়েকজন ছাত্র ‘না, না’ বলে চিৎকার করে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন, মোহাম্মদ আলী জিন্নাহকে কিছুটা অপ্রস্তুত করেছিল। কয়েক মুহূর্ত চুপ থেকে আবার বক্তৃতা শুরু করেছিলেন তিনি।

ঢাকায় ১৯৪৭-এর ৫ই ডিসেম্বর বর্ধমান হাউসে (বর্তমান বাংলা একাডেমি ভবন) বঙ্গীয় প্রাদেশিক মুসলিম লিগের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে প্রস্তাব নেয়া হয় যে উর্দুকে পূর্ব বাংলার সরকারি ভাষা করা হবে না। এ বৈঠকের সময় বাংলাকে পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে ভবনের সামনে বিক্ষোভও করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও শিক্ষকরা।


ফলে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার মাত্র ৬-৭ মাস পর জিন্নাহ যখন ঢাকায় আসেন - তখনই রাষ্ট্রভাষা প্রশ্নে পূর্ব পাকিস্তানের শিক্ষিত সমাজ রীতিমত উদ্বিগ্ন এবং ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিলেন। সম্পাদনা: খালিদ আহমেদ